Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ২৪শে জুলাই, ২০২৫ । ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content
আশার আলো দেখছেন তেরখাদাবাসী

চিত্রা নদী ভাঙন: খুলনা গেজেটে প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ

তেরখাদা প্রতিনিধি

১৯ জুলাই খুলনা গেজেটে “নদী ভাঙ্গনে হুমকিতে তেরখাদার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও ডাক বাংলোসহ অসংখ্য স্থাপনা” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে করে নদী তীরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা ও জনসুরক্ষার আশায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তেরখাদাবাসী।

উল্লেখ্য, চিত্রা নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, তেরখাদা থানা ভবন, ঐতিহাসিক ডাকবাংলোসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন এবং পাউবো’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করেন।

বুধবার (২৩ জুলাই) পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা সরেজমিনে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা জানান, জরুরি ভিত্তিতে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা পরবর্তী সমন্বয় সভায় উত্থাপন করে দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এলাকা পরিদর্শন করি। দ্রুত প্রকৌশলগত সমাধানের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক দিন ধরেই আমরা চিত্রা নদীর ভাঙন নিয়ে উদ্বিগ্ন। এখন প্রশাসন সক্রিয় হয়েছে দেখে আশার আলো দেখছি। তবে স্থায়ী সমাধান চাই।

ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার বাপ্পি মোল্লা জানান, প্রতিদিনই আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাতে হয়। প্রশাসনের পদক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি পেলেও চূড়ান্ত নিরাপত্তা চাই।

এদিকে স্থানীয় মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবার আশ্বাস পেলেও বাস্তবায়ন দেখিনি। শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ যদি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়,তবে তেরখাদার ইতিহাসের একটি অধ্যায় বিলীন হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা বলেন, বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বিশেষ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশাবাদী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র অস্থায়ী বাঁধ বা জরুরি পদক্ষেপে নদী ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়। চিত্রা নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণে আধুনিক নদী ব্যবস্থাপনা, জিও ব্যাগ স্থাপন, পাড় সংরক্ষণ প্রকল্পসহ দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন জরুরি।চিত্রা নদীর ভাঙন তেরখাদার জন্য কেবল একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং এটি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জনজীবনের অস্তিত্বের সংকট। প্রশাসনিক উদ্যোগ ও পাউবো’র পদক্ষেপ যদি দ্রুত বাস্তবায়িত হয়,তবে এই সংকট মোকাবেলা সম্ভব।তেরখাদাবাসী এখন কার্যকর বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।

খুলনা গেজেট/এএজে

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন